গোটা একটি দেশের মালিক তিনি


একটা গোটা দেশের মালিক তিনি। তিনি-ই সেখানকার শাসক। আর সে দেশের প্রধানমন্ত্রী তার বাবা। শুনলে অবাক হতে হয়, সে দেশের জাতীয় পশু টিকটিকি। এমনকী নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে সে দেশের রাজধানীর নামও তিনি রেখেছেন সুযশপুর।
তিনি সুযশ দীক্ষিত। জন্মসূত্রে ভারতীয়। মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা। আদ্যপান্ত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। আর সেই অ্যাডভেঞ্চারের নেশাই তাকে ‘মালিক’ করে তুলেছে একটি আস্ত দেশের। যার নাম সুযশ নিজেই দিয়েছেন- ‘কিংডম অব দীক্ষিত’। আর সে দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য সুযশ সকলকে আহ্বানও জানাচ্ছেন। জাতিসংঘের কাছে এ নিয়ে দরবারও করবেন তিনি।

ঘটনার শুরুটা কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারের হাত ধরেই।মরুভূমির ভিতর দিয়ে প্রায় ৩১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন সুযশ। পৌঁছেছিলেন মিশর আর সুদানের ঠিক মাঝের এক ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’।



দক্ষিণ মিশর এবং উত্তর সুদানের মরুভূমির মধ্যে প্রায় ২ হাজার বর্গমাইল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অঞ্চলের নাম বীর তাউইল। জনবসতিহীন এই অঞ্চল এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ বা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুযশ সেই অঞ্চলেরই শাসক বলে এখন নিজেকে দাবি করছেন।
একটি সফটওয়্যার কোম্পানির সিইও সুযশ গত ৬ নভেম্বর তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘নিজেকে ‘কিংডম অব দীক্ষিত’-এর রাজা হিসেবে আমি ঘোষণা করছি। আজ থেকে আমি রাজা সুযশ। বীর তাউইলের এই দাবিদারহীন অঞ্চল আজ থেকে আমার দেশ।’

আস্ত একটা দেশ আবিষ্কার করতে তাকে যে কঠিন কসরত করতে হয়েছে, সে কথাও ফেসবুকে লিখেছেন সুযশ।

তিনি লিখেছেন, ‘মিশরীয় সেনার দখলে থাকা রাস্তা ধরে সফর করছিলাম। গোটা এলাকাটা উগ্রপন্থীদের আখড়া। সে জন্যই এলাকায়‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশও দেয় সেনা। অনেক পরিকল্পনা করে, বেশ কয়েক জায়গায় অনুমতি নিয়ে সেখানে পৌঁছাতে পেরেছিলাম।’

লক্ষ্যে পৌঁছতে সেই সময় নিজের কাছে নিজেই তিনটি শর্ত রেখেছিলেন সুযশ। এক, সেনার দখলে থাকা যে এলাকা ধরে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন সেখানকার কোনও ছবি না তোলা। দুই, এক দিনের মধ্যেই ফেরত আসা।তিন, নিজের সঙ্গে কোনও মূল্যবান জিনিস না রাখা। আর তাতেই সাফল্য এসেছিল।ওই অঞ্চলে টানা ৬ ঘণ্টা ছিলেন সুযশ।



‘কিংডম অব দীক্ষিত’ -এ দাঁড়িয়ে পতাকা তোলেন তিনি। জায়গাটিকে নিজের দেশ হিসেবে দাবি করতে, সেখানকার মাটিতে শস্যদানা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সুযশ। কেন? সুযশের কথায়, ‘প্রাচীন সভ্যতায় কিছু নিয়ম ছিল। কোনও জমির মালিকানা দাবি করতে সেখানে ফসল ফলাতে হয় মালিককে। সে কারণেই আমি আমার দেশের জমিতে শস্য ছড়িয়ে, তাতে পানি দিয়েছি। এ দেশ এখন আমার।’

নিজের আবিষ্কার করা ‘দেশ’-এর একটি ওয়েবসাইটও খুলেছেন সুযশ। তার কথায়, ‘এখন আমি রাজা। ঠাট্টা নয়, কেন না একটা গোটা দেশের মালিক এখন আমি। জাতিসংঘে এ বার একটা ই-মেল পাঠানোর সময় এসে গিয়েছে এখন।’
বাবার জন্মদিনে দেশটির খোঁজ পেয়েছিলেন সুযশ। তাই, বাবা সুযোগ দীক্ষিতকেই ‘কিংডম অব দীক্ষিত’-এর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন সুযশ। এটাই বাবাকে জন্মদিনে দেয়া তার উপহার।
তবে, এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কোনও মতামত জানা যায়নি। সুযশ কবে জাতিসংঘকে চিঠি পাঠাবেন জানা যায়নি তা-ও।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

0 Response to "গোটা একটি দেশের মালিক তিনি"

Post a Comment

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel